আপনি কি জানেন সহজে Nid Service পাওয়ার উপায় কি? যদি না জানা থাকে তাহলে আপনার জানা উচিত। আর যদি জেনে থাকে তাহলে খুবই ভালো কথা। দেখা যায় Nid Service পাওয়া নিয়ে মানুষের নানা রকম মন্তব্য রয়েছে। তবে কেউ তো আর অযথাই মন্তব্য করতে আসে না! হয়তো ভোগান্তি হয় তাই মন্তব্য করে থাকে। কিন্ত কেন ভোগান্তি হয় এবং কি করলে সহজে Nid Service পেতে পারেন সে বিষয়ে যতটুকু পারি পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করবো।
কেউ বিষয়টিকে অন্যভাবে নিবেন না। না আমি অফিসের দোষ দিচ্ছি আর না মানুষের। সহজে Nid Service পেতে আপনার যেটুকু করা উচিত আমি সেটুকুই তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
Nid Service Bangladesh
Nid Service Bangladesh নির্বাচন কমিশনের অধীনে রয়েছে এবং দেশের প্রতিটি উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে এর অফিস রয়েছে জনগণের সেবা দেয়ার জন্য। বংলাদেশ নির্বাচন কমিশন তাদের মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে কর্মচারীর সংখ্যাও বাড়িয়েছে যাতে মানুষ সহজে Nid Seba পেতে পারে। কিন্ত তারপরও অনেকেই নানা রকম ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন।
এই ভোগান্তির জন্য Bangladesh Nid Service কে দোষ দেয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জনগণকে সহজে এনআইডি সেবা দেয়ার জন্য। যদি কোন কর্মচারী/কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে আপনাকে ভোগিন্তিতে ফেলে তাহলে সেটা ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির দোষ। তাছাড়া সেটা কোন ভাবেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দোষ নয়।
অফিসে থেকে কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী আপনাকে ভোগান্তিতে ফেলছে কি না সে বিষয়ে আমি সঠিক বলতে পারবো না। তবে আপনি আপনার দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করছেন কি না বা অফিসের নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না সে বিষয়ে আমি কথা বলবো। যদি আপনি আপনার কাজটা সঠিকভাবে করে থাকেন তাহলে অফিস আপনাকে ভোগান্তিতে ফেলতে পারবে না বরং তারা আপনাকে সেবা দিতে বাধ্য থাকবে।
Nid Service পেতে ভোগান্তি কেন হয়?
বিভিন্ন কারনে Nid Service পেতে ভোগান্তি হতে পারে। যে সকল কারনে সহজে সেবা পাওয়া যায় না সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি কারন উল্লেখ করার চেষ্টা করছি। আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্ত বাস্তবেই এমন হয়ে থাকে।
ধরুন আপনার Nid Card হারিয়ে গেছে। নিয়ম থানায় জিডি করে জিডির কপিসহ রিইস্যুর আবেদন করা। কিন্ত আপনি জিডি করার কষ্ট করবেন না বিধায় রিইস্যুর কারন হিসেবে ঠিকানা পরিবর্তন সিলেক্ট করে অনলাইনে Nid রিইস্যু আবেদন সাবমিট করেছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ১ মিনিটেই চেক করে দেখার ক্ষমতা রাখেন আপনি Voter Migration বা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেছেন কি না।
যদি আপনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন না করেই রিইস্যুর আবেদন করেন ঠিকানা পরিবর্তন এর কারণ দেখিয়ে তাহলে আপনার আবেদন অনুমোদন নাও তো দিতে পারে। আর দ্রুত আবেদন অনুমোদনের ম্যাসেজ না আসলেই তো বলা গেলো ভোগান্তি হচ্ছে।
এবার আসছি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের বিষয়ে। যেখানে সব থেকে বেশি ভোগান্তি অনুভব করে থাকে মানুষ।
Nid Card এ ভুল হয়েছে। আপনার প্রকৃত নাম রহিম শেখ। কিন্ত আপনার সন্তান তার সার্টিফিকেটে আপনার নাম করিম শেখ ব্যবহার করেছে। সন্তানের সার্টিফিকেট বাঁচাতে আপনি নিজের আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে দিয়েছেন। কিন্ত আপনার নিজের কোন কাগজপত্র নেই যেখানে আপনার নাম করিম শেখ লেখা আছে। এমন হলে তো ভোগান্তি নিশ্চিত।
বয়স বেশি উল্লেখ করে ভোটার হয়েছেন পাসপোর্ট করে বিদেশ যাবেন। কিন্ত যাওয়া আর হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করে সঠিক জন্ম তারিখ করে নিতে চাইছেন। অফিস থেকে যে সকল কাগজপত্র চাইছে তা জমা দিতে পারছেন না। এমন হলে সংশোধন হবে না বরং ভোগান্তি হবে।
এরুপ আরো অনেক কারন উল্লেখ করা সম্ভব। তাই সংক্ষেপে উল্লেখ করছি Nid Service পেতে ভোগান্তি হতে পারে যে সকল করানে-
আবেদনকারীর ইংরেজি নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে ইংরেজি সাপোর্টিং ডকুমেন্ট আবেদনের সাথে জমা না দিলে আবেদন অনুমোদন নাও হতে পারে। ফলে
পিতার নাম তার আইডি কার্ডে সঠিক আছে কিন্ত সন্তানের সার্টিফিকেটে ভুল হওয়ার কারণে সার্টিফিকেট অনুযায়ী পিতার নাম পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করলেও সে আবেদন অনুমোদন হবে না।
স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে কাবিননামা/বৈবাহিক সনদসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রমাণাদি ব্যতীত আবেদন করলে সে আবেদন অনুমোদন হয় না।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদনের জন্য ফরম ১৩ সঠিকভাবে পূরণ না করলে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত না করলে ভোটার স্থানান্তর হয় না।
ঠিকানা সংশোধন করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিলে ঠিকানা সংশোধন হয় না।
এমন আনেকেই আছে যারা এনআইডি কার্ডের র'ক্তের গ্রুপ সংশোধনের জন্য আবেদন করেছে কিন্ত র'ক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্টই জমা দেয় নি।
অফিসে গিয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে আবেদনকারী ব্যতীত অন্য কেউ আবেদন জমা দিতে গেলে আবেদন গ্রহণ নাও করতে পারে। আবেদন গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দিলেও ভোগান্তি হবে।
নতুন ভোটার হবেন। যে সকল কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দেয়া উচিত তার সবগুলো জমা দেন নি। অথবা অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করার সময় ভুল তথ্য এন্ট্রি করে ফেলেছেন। এমন হলে Nid Seba পেতে ভোগান্তি হওয়া স্বাভাবিক বিষয়।
ভোগান্তি ছাড়া Nid Service পাওয়ার উপায়
নতুন ভোটার নিবন্ধন, Nid Reissue করা, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা, Nid Card সংশোধন করা ইত্যাদি যে কোন সেবা সহজে পেতে হলে সঠিক পরামর্শ নিয়ে সঠিক ভাবে কাজ করতে হবে। সেবা গ্রহণকারী যদি ভুল করে তাহলে ঝামেলা হতেই পারে। তাই সহজে Nid Service পেতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন-
Nid সংশ্লিষ্ট কোন প্রকার সেবা নেয়ার আগে অবশ্যই সঠিক পরামর্শ নিন। তারপর আবেদন করুন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আগে অফিসে খোজ নিন নতুন ভোটার নিবন্ধনের কাজ চলমান আছে কি না। সঠিকভাবে ফরম পূরণ করুন। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিন।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য সময় হাতে রেখে সঠিকভাবে ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করুন।
Nid Card হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করুন। তারপর Nid রিইস্যুর আবেদন করুন।
Nid কার্ডে ভুল হলে আগে পরামর্শ নিন Nid সংশোধন করতে কি কি লাগে তারপর আবেদন করুন। মনে রাখবেন Nid সংশোধন হয় আবেদনের সাথে জমা দেয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে। কাগজপত্র দিয়ে প্রমাণ করাতে পারলেই Nid সংশোধন হয়। Nid কার্ডের ভুল প্রমাণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সাপোটিং ডকুমেন্ট জমা দিন।
আপনার Nid কার্ডে আপনার নাম সঠিক থাকলে সন্তানের সার্টিফিকেটে হওয়া ভুলের জন্য নিজের আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন করবেন না। যেখানে ভুল হয়েছে সেখানে সংশোধন করার চেষ্টা করুন।
তথ্য গোপন করে অসত্য তথ্য দিয়ে কখনোই ভোটার হবেন না। অর্থাৎ বিদেশে যাওয়ার জন্য জন্ম তারিখ কম/বেশি উল্লেখ করে ভোটার হওয়া উচিত নয়।
অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য Nid Card সংশোধনের আবেদন করবেন না। করলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন না, ফলে Nid সংশোধন হবে না।
Nid Card এ ছোট খাটো যে ভুলই থাক না কেন প্রয়োজন না হলেও তা সংশোধনের আবেদন করে সংশোধন করে নিন। তা না হলে যখন প্রয়োজন পড়বে তখন সহজে Nid Service না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়বেন।
অফিসে প্রতিদিন হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ে। জটিলতার ভিত্তিতে বিভিন্ন অফিসে সেগুলো বিভক্ত করে দেয়া হয়। অর্থাৎ আবেদনের ক্যাটাগরি তৈরী করা হয়। আপনার আবেদন কোন ক্যাটাগরিতে আছে তা উপজেলা অফিস থেকে জেনে নিন এবং ওই ক্যাটাগরির আবেদন যে অফিস থেকে সংশোধন হবে, প্রয়োজনে সেখানে যোগাযোগ করুন।
অফিসে আবেদন জমা দেয়ার সময় এবং Nid Card/Smart Card গ্রহণ করার সময় আবেদনকারীর স্বঃ শরীরে অফিসে উপস্থিত থাকা উচিত। একজনের আবেদন অন্যজন জমা দিতে গেলে বা এনআইডি কার্ড গ্রহণ করতে গেলে ফিরিয়ে দিতে পারে।
অফিসে পরামর্শ নিতে গেলে বা আবেদন করতে গেলে কর্মকর্তা/কর্মচারীর সাথে বিনয়ীভাবে কথা বলুন।
উপরোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রেখে পদক্ষেপ নিলে Nid সেবা পেতে খুব বেশি ভোগান্তি হওয়ার কথা না। এ পরামর্শ সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ এবং এ বিষয়ে আমার অনেকটাই ধারণা রয়েছে তাই আপনাদের মাঝে বিষয়টা শেয়ার করলাম।
অফিসে কর্মরত সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী অবশ্যই উচ্চ শিক্ষিত এবং যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করলে আপনিও ভালো ব্যবহার এবং সেবা পাবেন এটা আমার বিশ্বাস।
আর যদি প্রকৃতই কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর কারণে আপনি ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন তাহলে তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করতে পারেন। প্রতিটি অফিসেই দেখবেন একটা করে অভিযোগ বক্স রয়েছে।
তবে অভিযোগের বিষয়টা সম্পূর্ণই আপনার ব্যক্তিগত বিষয় আমি কখনোই আপনাকে অভিযোগ করার বিষয়ে উৎসাহিত করতে পারি না।
এই ছিলো Nid Service Bangladesh থেকে সহজে Nid Service পাওয়ার কিছু পরামর্শ। আশা করি পরামর্শগুলো আপনাদের ভালো লাগেছে এবং ফলপ্রসূত হবে। যদি এ বিষয়ে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ..!