ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন - র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্মস্থান সংশোধনে করণীয়

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন - র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্মস্থান সংশোধনে করণীয়

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

এনআইডি কার্ডে বিদ্যমান সকল তথ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে ভুল থাকা কোন ভাবেই উচিত নয়। অনেকেই আছেন যাদের এনআইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ ভুল আছে বা উল্লেখ করা নেই। কারো কারো এনআইডি কার্ডে জন্মস্থান বা জন্ম জেলা ভুল আছে বা উল্লেখ নেই। যদিও এই ভুলগুলো থাকার কারণে তেমন কোন জটিলতায় হয়তো পড়তে হচ্ছে না। তাই কেউ সময় থাকতে এগুলো সংশোধনও করছেন না। কিন্ত কখনো না কখনো এআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ডের এই সাধারণ একটি ভুল আপনার বড় কোন কাজে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারে। তাই যদি এনআইডি কার্ডে/ভোটার আইডি কার্ডে ছোট থেকে ছোট কোন ভুলও হয়ে থাকে তবে সময় থাকতে তা সংশোধন করিয়ে নেয়া উচিত।

যে কারণে ভোটার আইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম জেলা ভুল হয়ে থাকে

আমাদের দেশের বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষই জানে তা তাদের র*ক্তে*র গ্রুপ কি। কারণ সেটি জানার মত তেমন কোন প্রয়োজন বোধ করে নি কখনো। ২০০৭-০৮ সালে যারা ভোটার হয়েছে তখন হাতে গোনা কিছু মানুষের র*ক্তে*র গ্রুপ জানা ছিলো বাকীদের র*ক্তে*র গ্রুপ কি তাদের জানা ছিলো না। তাই তখন অধিকাংশ মানুষের এনআইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ দেয়া হয়নি। কিছু লোকের Nid Card/ভোটার আইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ দেয়া থাকলেও ভুলের সংখ্যা কম নয়। 


বর্তমান সময়েও লক্ষ্য করা যায়, অফিসে অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েরা নতুন ভোটার হতে আসলে ২ নং নিবন্ধন ফরমে র*ক্তে*র গ্রুপ না উল্লেখ করেই আবেদন করে থাকে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে বলে র*ক্তে*র গ্রুপ কি জানা নেই এবং সেভাবেই ভোটার হয়ে চলে যায়। র*ক্তে*র গ্রুপ কি তা ভোটার হওয়ার সময় উল্লেখ না করা হলে অনেক সময় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী নাও হতে পারে। তাই উচিত ভোটার হওয়ার সময় র*ক্তে*র গ্রুপ উল্লেখ করা। 

এমন অনেকেই আছে যারা নিজের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার না হয়ে বর্তমান ঠিকানা যেখানে কর্মস্থল ছিলো সেখানে ভোটার হয়েছেন। পরবর্তীতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে স্থায়ী ঠিকানায় চলে এসেছেন। এরুপ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের অস্থায়ী ঠিকানাকেই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেখানো হয়েছে। তার সাথে তিনি যে জেলাতে চাকরি/কাজ করতেন সেই জেলাকেই তার জন্ম জেলা হিসেবে দেখানো আছে। প্রথম দিকে এমন ধরণের ভুল প্রচুর পরিমানে হয়েছে। 

ভোটার আইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম জেলা সংশোধনের আবেদন পদ্ধতি

প্রথমত সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ২-নং সংশোধনী ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করেতে হবে। এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ফি হিসাব করে দেখতে হবে কত টাকা প্রযোজ্য। তারপর বিকাশের মাধ্যমে এনআইডি ফি পরিশোধ অথবা রকেট অ্যাপ দিয়ে Nid Fee পরিশোধ করতে হবে।  নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের পিছনে পিন-আপ করে অফিসে জমা দেয়া যায়।

দ্বিতীয়ত অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করা যায়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এই ঠিকানায় গিয়ে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর প্রোফাইল অপশনে গেলে আপনার রু*ক্তে*র গ্রুপ, জন্ম জেলাসহ যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে।

সেখান থেকে র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম জেলা এডিট করে সঠিক ভাবে লিখে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করতে হবে। তারপরের ধাপে পেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য দেখাবে, তারপরের ধাপে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে, এভাবে প্রতিটি ধাপ পার করে আবেদন সাবমিট করা যাবে।

আবেদন সাবমিট করা হয়ে গেলে আবেদনের একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করা যাবে এবং সেটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে কাছে রেখে দেবেন। পরবর্তীতে কখনো অফিসে গিয়ে খোজ নিতে চাইলে আবেদনের ওই কপিটি সাথে নিয়ে যেতে হবে।

এনআইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম জেলা সংশোধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ

 ❖❖ র*ক্তে*র গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট:  এনআইডি কার্ডে/ভোটার আইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ সংশোধন অথবা সংযোজন করার জন্য যে কোন একটি ভালো প্যাথোলজিতে গিয়ে র*ক্তে*র গ্রুপ পরীক্ষা করে রিপোর্ট সংগ্রহ করবেন এবং আবেদনের সাথে এই রিপোর্টের ফটকপি জমা দিতে হবে (অনলাইনে আবেদন করলে মোবাইলে ছবি তুলে বা স্ক্যান করে আপলোড দিতে হবে)।

 ❖❖ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ: এনআইডি কার্ডে/ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম জেলা সংশোধন করার জন্য অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা করতে হবে। আপনার দাখিলকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদটি আপনার জন্ম জেলার প্রমাণ হিসাবে কাজ করবে। 

 ❖❖ চেয়ারম্যান/পৌর কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র: ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান/পৌর কাউন্সিলরের নিকট থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করবেন এবং আবেদনের সাথে জমা করবেন। 

 ❖❖ নাগরিক সনদ: ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান/পৌর কাউন্সিলরের নিকট থেকে আবেদনকারীর নাগরিকত্বের সনদ সংগ্রহ করবেন এবং আবেদনের সাথে জমা দেবেন। ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম জেলা সংশোধনের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের সনদ বিশেষ ভূমিকা রাখে। 


 ❖❖ আবেদনকারীর এনআইডি/ভোটার আইডি কার্ডের কপি: অফিসে আবেদন করলে অবশ্যই আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ডের কপি জমা দিতে হবে। 

উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসারে আবেদন করে এবং উল্লেখিত কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিলে এনআইডি কার্ডে/ভোটার আইডি কার্ডের র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম জেলা সংশোধন হয়ে যাবে। আবেদন দাখিলের পর আবেদনের উপর গৃহীত কার্যক্রম আবেদনের সাথে সরবরাহকৃত মোবাইল নম্বরে ম্যাসেজর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। 

আবেদন অনুমোদিত হলে অনলাইন সিস্টেম থেকে মূল এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ডের অনুলিপি ডাউনলোড করা যাবে। অথবা সংশোধিত তথ্যের কার্ডটি অনুমোদন হওয়ার ৩-৫ দিন পরে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করা যাবে।

এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ডে র*ক্তে*র গ্রুপ ও জন্ম স্থান সংশোধন সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করে জানাবেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ...।

নবীনতর পূর্বতন