নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম - নতুন ভোটার নিবন্ধনে করণীয়
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা সময় মত নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে পারেননি। এমনকি তারা জানে না নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম কি এবং নতুন ভোটার হতে প্রয়োজনীয় কাগজগুলো কি? যদিও নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম খুবই সহজ তবুও অনেকেই সঠিকভাবে আবেদন করতে না পারার কারণে ভোগান্তিতে পড়ে। এই পোষ্ট থেকে জানতে পারবেন নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম কি? নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে? নতুন ভোটার হতে কত দিন লাগে? নতুন ভোটার হওয়ার পর এনআইডি নম্বর কিভাবে পাবেন এবং অনলাইন থেকে নতুন আইডি কার্ড কিভাবে দেখবেন বা ডাউনলোড করবেন এ সব কিছু সম্পর্কে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করবো।
{tocify} Stitle={Custom Title}
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদনকারীর বয়স
নতুন ভোটার নিবন্ধন বা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে হলে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ ০১/০১/২০০৭ ইং তারিখ বা তার পূর্বে হতে হবে। তাতে আপনার বয়স ১৮ বছরের কম-বেশি যাই হোক কোন সমস্যা হবে না। তবে ১৮ বছরের কম হলে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড পাবেন কিন্ত ভোট দিতে পারবেন না। যখন বয়স ১৮ বছর হয়ে যাবে তখন এমনিতেই ভোটার তালিকায় নাম চলে আসবে এবং ভোট দিতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার আবেদন পদ্ধতি:-
১। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ২ নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ভোটার নিবন্ধন ফরমটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরমের সাথে পিনআপ করে অফিসে জমা দিতে হবে। প্রতিটি ২ নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমে একটি করে ইউনিক নম্বর থাকে যার মাধ্যমে আবেদনকারীর তথ্যাদি যাচাই করা যায়। তাই ভোটার নিবন্ধন ফরমটি ফটোকপি করে একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করা যাবে না বা কোন ফটোকপির দোকান থেকে এই ফরম সংগ্রহ করবেন না। আবেদন করার পর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার আপনার আবেদনটি যাচাই করে সকল তথ্য ও কাগজপত্র সঠিক পেলে নতুন ভোটার করার অনুমোদন দেবেন।
নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ
ফরমে ৪০ নম্বর ক্রমিকে যাচাইকারীর নাম লিখতে হবে। যাচাইকারী অবশ্যই একজন জনপ্রতিনিধি হতে হবে। যেমন- চেয়ারম্যান/ভাইস চেয়ারম্যান/মেম্বর/মহিলা মেম্বর/ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইত্যাদি। যাচাইকারীর নামের স্থানে কোন সাধারণ মানুষের নাম না লেখাই ভালো। এতে নতুন ভোটারের আবেদন বাতিল হতে পারে।
আবেদনপত্রের ৪১ নং ক্রমিকে যাচাইকারীর NID Number লিখতে হবে এবং ৪২ নং ক্রমিকে যাচাইকারী স্বাক্ষর করবেন এবং অবশ্যই সীল ব্যবহার করবেন।
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে?
❖ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (বাধ্যতামূলক)।
❖ এসএসসি/সমমান সনদ। প্রয়োজনে এসএসসি সনদের সাথে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদটি জমা দিতে পারেন। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেই তাদের ক্ষেত্রে জমা দেয়ার প্রয়োজন নেই।
❖ পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের কপি।
❖ বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কপি এবং কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ।
❖ র'ক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট। এটি বাধ্যতামূলক না তবে জমা দিতে পারলে ভালো।
❖ চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/ওয়ার্ড মেম্বর/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র।
❖ নাগরিকত্বের সনদ (বাধ্যতামূলক)।
❖ বিদ্যুৎ বিল/পানি বিল/গ্যাস বিলের কপি (বাধ্যতামূলক)। বাড়ীর যেকোন একজন সদস্যের নামে হলেই হবে।
❖ চৌকিদারী ট্যাক্স রশিদ/পৌর করের রশিদ/বাড়ী ভাড়ার রশিদ (বাধ্যতামূলক)। বাড়ীর যেকোন একজন সদস্যের নামে হলেই হবে।
❖ পূর্বে ভোটার হইনি মর্মে অঙ্গীকারনামা। যাদের বয়স অনেক বেশি তাদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
❖ পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে)।
❖ ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি (যদি থাকে)।
উপরোক্ত কাগজপত্রগুলোর মধ্যে যেসব কাগজপত্র আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেগুলো আবেদনের সাথে জমা দেবেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসার আবেদনটি অনুমোদন দেয়ার পর আপনার ছবি, স্বাক্ষর, দশ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ স্ক্যান করে নেয়া হয়। তারপর আবেদনের নিচের অংশ কেটে আপনাকে দেবে। যাকে ভোটার নিবন্ধন স্লিপ বলা হয়। সবার উচিত ভোটার নিবন্ধন স্লিপটি সংরক্ষণ করা। অনেকে অসাবধানতার কারণে ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে ফেলে এবং পরবর্তীতে ভোগান্তিতে পড়ে। কারণ ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর ও নতুন ভোটার আইডি কার্ড উত্তোলের জন্য স্লিপটি প্রয়োজন হয়।
আবেদনকারীর ছবি তুলে নেয়ার পর ৫-৭ দিনের মধ্যে আবেদনে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে ম্যাসেজের মাধ্যমে এনআইডি নম্বর/ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর প্রেরণ করা হয়। কোন কারণে মোবাইলে ম্যাসেজ না আসলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে অথবা অনলাইন থেকে এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা যায়।
এনআইডি নম্বর/ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর পাওয়া পর অনলাইন থেকে নতুন ভোটারদের এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করা যায়। কার্ডটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে নিতে হবে। এটি দিয়ে সব কাজই করা যাবে। নতুন ভোটারদের স্মার্ট এনআইডি কার্ড আসলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিস থেকে বিতরণ করা হয়।
যদি কোন কারণে হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার হতে না পারেন তাহলে প্রয়োজনের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করে নতুন ভোটার হতে পারবেন। প্রয়োজনের ঠিক আগে অফিসে গিয়ে তাড়াহুড়ো করবেন না তাতে আপনার ভোগান্তি হতে পারে। কারণ সব সময় নতুন ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম চলমান নাও থাকতে পারে। নতুন ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম বন্ধ থাকা অবস্থায় অফিসে ভোটার হতে গেলে অফিস কর্তৃপক্ষ আপনাকে সেবা দিতে ব্যর্থ হতে পারে। তাই আপনি যদি এখনো ভোটার না হয়ে থাকেন তাহলে উপরোক্ত উপায়ে আবেদন দাখিল করে ভোটার হয়ে যাবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম বা নতুন ভোটার নিবন্ধন সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। পোষ্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ.....।
আমার স্ত্রীর বাড়ি গাইবান্ধা, নানার বাড়ি লালমনিরহাট । ওর জন্ম নিবন্ধন করা লালমনিরহাটে ।
উত্তরমুছুনআর আমার বাসা চাঁপাইনবাবগঞ্জ । এখন তাকে আমি আমার এলাকার ভোটার করতে চাই । সে ক্ষেত্রে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে ?
এই পোষ্টের মধ্যে যে সকল কাজপত্রের কথা উল্লেখ আছে সেগুলোর মধ্যে আপনার স্ত্রীর ক্ষেত্রে যেগুলো প্রযোজ্য সেগুলোই আবেদনের সাথে জমা দিবেন।
মুছুনআমার জন্মসনদে আমার নাম ভূল আছে সেক্ষেত্রে আমার কাছে কোন ডকুমেন্ট নাই। এটা কিভাবে সংশোধন করবো
উত্তরমুছুনজন্ম সনদ সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভার কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন।
মুছুনআমার এন আইডি কার্ডে নাম ভুল, কিভাবে সংশোধন করবো
উত্তরমুছুনNid Card এ নাম ভুল হলে সংশোধনের আবেদন করতে হবে এবং দুইটা উপায়ে সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। প্রথমত সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ২ নং সংশোধনী ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দিতে পারবেন এবং দ্বিতীয়ত, অনলাইনে Nid Card সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। যে কোন একটি উপায়ে আবেদন করে দিন। এনআইডি কার্ডে নাম সংশোধন করার জন্য কি কি কাগজপত্র জমা দেয়া যেতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ আমাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনে দেখে নিতে পারেন।
মুছুননতুন ভাবে Nid Card এর আবেদনের কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হয় -?
উত্তরমুছুনসারাদেশে ধাপে ধাপে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০২২ চলমান রয়েছে। আপনার এলাকায় হালনাগাদ চলছে নাকি শেষ হয়ে গেছে এবং অফিসিয়ালী নতুন ভোটারের কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে এ সকল তথ্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে থেকে জানতে হবে।
মুছুনআমার এবং আমার বাবা মার জন্মনিবন্ধন এবং আমার বাবা মার ভোটার এন আইডি কাড বাড়ির মানে জন্মস্থান যেখানে সেখানে সেক্ষেত্রে আমি থাকি চট্টগ্রাম আমি কী এখন চট্টগ্রামে ভোটার হতে পারবো। আমার চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট আছে তাও গ্রামের আবার আমার জন্মনিবন্ধন বাড়ির মানে জন্মস্থান যেখানে সেখানে আমি কি এখন পারবো চট্টগ্রাম ভোটার হতে প্লিজ বুঝিয়ে খুব ভালো ভাবে উওর টা দিয়েন
উত্তরমুছুনআপনি যদি চট্টগ্রামে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকেন তাহলে সেখানে ভোটার না হওয়াই ভালো। চট্টগ্রামে ভোটার হতে গেলে অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে নাগরিকত্বের সনদ, চেয়ারম্যান/কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র, বিদ্যুৎ বিলের কপি, চৌকিদারি ট্যাক্স/পৌর করের রশিদ ইত্যাদি লাগবে এবং এগুলো চট্টগ্রামের ঠিকানার হতে হবে। যদি আপনি উক্ত কাগজপত্রগুলো চট্টগ্রামের ঠিকানা থেকে সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে সহজেই চট্টগ্রামে ভোটার হতে পারবেন। আর এগুলো গ্রামের বাড়ির ঠিকানার হলে চট্টগ্রামে আপনাকে ভোটার নাও করতে পারে। সব থেকে ভালো হয়ে যেখানে আপনার স্থায়ী ঠিকানা সেখানে গিয়ে ভোটার হলে।
মুছুন