একাধিকবার ভোটার নিবন্ধনের ফলে যা হতে পারে - Results of double voter registration
বাংলাদেশর আইন অনুযায়ী একজন নাগরিক কেবলমাত্র একবারই ভোটার হতে পারেব একাধিকবার নয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য প্রতি বছর বা ১ বছর পর পর সারাদেশে ধাপে ধাপে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আপনারা যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য বা এখনো ভোটার হননি তারা এই সময় ২ নং নিবন্ধন ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করে নতুন ভোটার হতে পারবেন।
যারা ইতিমধ্যে ভোটার হয়েছেন। তারা ভুল করেও দ্বিতীয় বার ভোটার হতে যাবেন না বা ফরম পুরণ করবেন না। একাধিকবার ভোটার হয়েছেন তো নিশ্চিত বিপদে পড়বেন। কারণ একাধিবার ভোটার হওয়া আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। আর এর জন্য জেল এবং সাথে জরিমানা উভয়ই হতে পারে। তার থেকেও বড় কথা আপনি আপনার ভোটাধিকার হারাতে পারেন একাধিকবার ভোটার হওয়ার কারণে।
আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষই ভুল করে একাধিকবার ভোটার হয়ে থাকে আবার কেউ কেউ জেনে বুঝে দ্বৈত ভোটার হয়। অনেকেই পূর্বের তথ্যে ভুল থাকার কারণে পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে ভোটার হয়। কেউ বলেন আমি তো স্মার্ট কার্ডের জন্য ছবি তুলেছিলাম, আমিতো এখনো ভোটার হইনি। বিশেষ করে মেয়েরা বলে বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসেছি মেম্বর/চেয়ারম্যান সাহেব নতুন করে ভোটার হওয়ার জন্য বললেন তাই ভোটার হয়েছি। কেউ বলে আমার কার্ড হারিয়ে গিয়েছিলো অথবা স্লিপ হারিয়ে গিয়েছিলো তাই আবার ভোটার হয়েছি। আপনারা এই সব ভুল করবেন না। একাধিকবার ভোটার হলে যা হবে তা হচ্ছে, প্রথমবারের ভোটার তথ্য বহাল থাকবে আর পরবর্তীতে হওয়া ভোটারের তথ্য আটোমেটি ডিলিট হয়ে যাবে। যতোবার ভোটার হবে ততোবার তথ্য ডিলিট হয়ে যাবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটা বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, যারা একাধিক বার হচ্ছে তাদের সব তথ্যই অটোমেটি ডিলিট হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আপনি আর ভোটার থাকবেন না, কোন তালিকায়ই আপনার নাম থাকবে না। আর নাম না থাকলে আপনি ভোট দিতে পারবে না এবং কার্ড পাবেন না। পূর্বে কার্ড পেয়ে থাকলেও ওই কার্ড কোন কাজে লাগাতে পারবেন না। কারণ আপনার তথ্য কমিশনের সার্ভারে ডিলেটেড অবস্থায় থাকবে। আর তা ঠিক করার জন্য ঘুরতে ঘুরতে জান পরান বের হয়ে যাবে। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে এদেরকে দেখুন একটু।
উনি হচ্ছেন সামিনা, সুবর্ণতলী পুরাতন পাড়ার ভোটার, তিনি পুনরায় সাবিনা খাতুন নামে কচুবাড়িয়া গ্রামে ভোটার হয়েছেন। দেখুন দুইটা ভোটার তথ্যই ডিলেটেড অবস্থায় আছে। অর্থাৎ তিনি তার ভোটাধিকারই হারিয়ে ফেলেছেন।
তাছলিমা খাতুন, নগর জোকা গ্রামের ভোটার, তিনি বিয়ের পর পুনরায় দলিলপুরে গিয়ে মোছাঃ তাছলিমা খাতুন নামে ভোটার হয়েছেন। এখন দুইটাই ডিলেটেড।
স্বাপন কুমার মন্ডল, চন্ডিবর গ্রামের ভোটার, তিনি পুনরায় একই নাম ব্যবহার করে নবগ্রাম গ্রামে ভোটার হয়েছেন। তার দুটো ভোটার তথ্যই ডিলেটেড। হতে পারে উক্ত ভোটারগণ দুই বার নয় তারও বেশিবার ভোটার হয়েছেন। কারণ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বৈত ভোটারের ক্ষেত্রে প্রথম ভোটারের তথ্য বহাল রাখে এবং পরবর্তীতে হওয়া ভোটার তথ্য ডিলিট করে দেয়। আর উক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় দুইটা ভোটার তথ্যই ডিলেটেড হয়েছে। তাই সন্দেহ হয় তারা দুইবারের বেশি ভোটার হয়েছেন।
সারাদেশে এমন হাজারো মানুষ আছে যারা একাধিবার ভোটার হয়ে আজ তাদের ভোটাধিকার হারিয়েছে। শুধু তাই নয় তারা কার্ড পাচ্ছে না, পূর্বে কার্ড পেয়ে থাকলেও সেটি কোন কাজে ব্যবহার করতে পারছে না।
তাই বলছি, আপনি যদি একবার ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে পুনরায় ভোটার হতে যাবে না। আপনার ভোটার তথ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে আপনি আপনার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিস্তারিত খুলে বলুন। আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেয়া হবে।
ধন্যবাদ এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। অনেকের এমন সমস্যা হয় তার উপকার পারে।
উত্তরমুছুন